- 360
- 184
- 59
একদিন প্রতিদিন
৩০শে এপ্রিল, বেলা ১১:২০
‘একটা কথা বলতেই হবে, ছেলে আমার খুব ভাগ্যবান...’ কথাটা ছুড়ে দেয় অখিলেশ, সমুর বাবা, তার বৌমার দিকে।
পরদিন অনেক সকালে উঠতে হয়েছে সুমিতাকে। সমুকে দিয়ে বাজার করিয়ে নিয়েছে। কারণ ও অফিস বেরিয়ে যাবার পরই রান্না চাপাবে ঠিক করেছে। সমু সাধারণতঃ ভাত খেয়েই অফিস যায়। তাই সকাল সকাল উঠেই তাড়াহুড়ো করে ভাত, একটা তরকারি আর মাছের একটা পদ সুমিতা রান্না করে দেয় সমুকে, পরে সে দুপুরের দিকে সংসারের সব কাজ সেরে স্নান সেরে পুজো করে খেতে বসে। এটাই হয়ে থাকে নিত্যদিন প্রায়... ছুটির দিনগুলো বাদে বা যদি কচিৎকখনও তাদের অন্যকোথাও নিমত্রণ না থাকে। কিন্তু এখন যে হেতু বাড়ীতে অতিথিরা রয়েছে তাই সমুই নিজের থেকে বলেছে যে অত তাড়াতাড়ি রান্না করার দরকার নেই, সে না হয় যা হোক কিছু লাঞ্চ এ বাইরে খেয়ে নেবে, কারণ এত সকাল সকাল ভাত বসালে যখন বাকিরা খাবে তখন ঠান্ডা হয়ে যাবে সে ভাত। তার থেকে সুমিতা বরং ধীরে সুস্থে পরে রান্না বসালেই চলবে। একবার সুমিতা বলেছিল যে সে না হয় সমুর জন্য এই ক’টা দিন না হয় ও সকালে একবার ভাত করে দেবে, তারপর বেলার দিকে আর একবার ভাত বসিয়ে দেবে। কিন্তু সমু আপত্তি করেছিল, বারবার করে সুমিতা ভাত বসাবে, সেটা হয়তো চায়নি তার স্বামী, সুমিতাও আর দ্বিমত করে নি। সত্যি তো, ও না হয় পরে যখন খায় তখন যা হোক করে মাইক্রওভেনে ভাতটা গরম করে নিয়ে খেতে বসে, কিন্তু সেটা তো আর সমুর বাবা বা বাড়ীর জামাইকে দেওয়া যায় না, আর বার বার করে ভাত বসালেও গ্যাস পুড়বে অনেক, তাই সমুকে সকাল বেলা একটু জলখাবার করেই খেতে দিয়েছে সে, তাই খেয়ে সমু অফিস চলে গিয়েছে। টুকটাক বাকি কাজ সেরে সে রান্না সারতে কিচেনে ঢুকেছে। খেয়াল করেনি কখন তার শশুর এসে দাঁড়িয়েছে পাশে... শশুরের গলার স্বরে ঘুরে মুখ তুলে তাকায় সুমিতা।
‘হটাৎ? এই কথা?’ প্রশ্ন করে সুমিতা।
আজও সে কাল রাতের মতই একটা পাতলা সুতির শাড়ী পরে তার আঁচলটাকে পেঁচিয়ে কোমরের মধ্যে গুঁজে দিয়েছে। পাতলা শাড়ীটাকে এইভাবে টান করে পরার ফলে তার শরীরের সমস্ত চড়াই উৎরাই প্রকট হয়ে রয়েছে যথারীতি। আজকাল সে আর শশুরের সামনে ঘোমটা টানে না। সে দিন অনেক আগেই চলে গিয়েছে... শাশুড়ি মায়ের মারা যাবার পরই। কিচেনের জানলা দিয়ে আসা দিনের আলোয় সুমিতার ইষৎ স্ফিত মসৃণ পেটটা চোখের সম্মুখে দৃষ্যমান। নিজেও সেটা তার সহজাত অনুভুতিতে বুঝতে পারে সুমিতা। তাই শশুর এসে দাঁড়িয়েছে দেখে একবার হাত বাড়িয়ে নিজের আঁচলটা কোমর থেকে খুলে পেট ঢেকে দেবে বলে টানতে গিয়েও কি মনে করে আর হাত বাড়ায় না সেই দিকে। আর তাছাড়া তার হাতে তখন সমুর বাজার থেকে এনে দেওয়া কাতলা মাছের পেটি ধরা, তাই মাছের সোগ্রী হাতে আর ইচ্ছা করে না নিজের পোষাকে হাত দিতে। এমন কিছু নিশ্চয় দেখা যাচ্ছে না, আর দেখা গেলে যাবে’খন... ভেবে আবার ফিরে দাঁড়িয়ে মাছের টুকরোগুলো বেসিনের কলের নিচে ধুতে থাকে সে।
মাছ ধুতে ধুতে ফিরিয়ে প্রশ্ন করে, ‘কই, বললেন না তো, হটাৎ কেন এতদিন পর এই কথা বললেন?’
‘কাল কি করছিলে..., এখানে... রাতে?’ সুমিতার প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে একটা লম্বা শ্বাস টেনে, থেমে থেমে আবার প্রশ্ন করে অখিলেশ। আজ এত বছর পর সত্যিই যেন সে তার বৌমার দিকে ভালো করে তাকাল। বৌমাকে চোখের সামনে দেখতে দেখতে কেমন যেন একটা মাদকতা উপলব্ধি করতে লাগল সে। আগে কখনও ভেবে দেখনি তার পুত্রবধু এতটা যৌনমদির। কখনও দেখেনি তার ছেলের বউএর শরীরটাতে এত আকর্ষণীয় চড়াই উৎরাই রয়েছে। চোখে পড়েনি কখনও সুমিতার বুকের এই ভরাট সম্পদের উপস্থিতি বা নিতম্বের এই উত্তলতা আর তার সাথে সেটার এই ব্যাপ্তি, কিম্বা ইশৎ মেদের পরতে ঢাকা সামান্য স্ফিত মসৃন পেটের মাঝে নাভীর গভীরতা। এত বছর অখিলেশ যে চোখ নিয়ে এই সামনে গৃহকর্মরত নারীর সৌন্দর্য অবলোকন করেছে, আজ হটাৎ করে তার সেই সমস্ত ধ্যান ধারণা কেমন উলটে পালটে যাচ্ছে বলে মনে হয়। এই মুহুর্তে নিজের পুত্রবধুর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে তার মনে হচ্ছে এতদিন ধরে সে যা ভেবেছিল, ভুল, সব ভুল। নারীর সৌন্দর্য শুধু তার রূপে বা গুণে নয়, নারীর সৌন্দর্য নারীর নারীত্বে... তার শরীরের কোমলতায়... তার শরীরের প্রতিটি চড়াই উৎরাইতে... একটি নারীর প্রতিটা রোমকূপ সে সৌন্দর্য মাদকতা ছড়িয়ে রয়েছে... তার চলনে, বলনে, নড়ায়, চড়ায়, বস্ ওঠায়, এমনকি এক লহমার চোখের চাহনিতে ... সে সৌন্দর্য কখনও সূর্যের মত তীব্র, চন্দ্রীমার মত স্নীগ্ধ আবার কখনও সাধারণ দর্শনে স্বাভাবিক মনে হলেও, সেখানে এক অসম্ভব চৌম্বকিয় আকর্ষণ বিদ্যমান। যা তাকে এই মুহুর্তে এক টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। যেন তার সমস্ত জ্ঞান... বুদ্ধি... বিবেচনা... শিক্ষা... দিক্ষা... মা... মর্যাদা... ঠিক... বেঠিক... ন্যায়... অন্যায়..., সব, সব কিছু মিলে মিশে একাকার করে দিচ্ছে।
প্রশ্নটা শুনে মাছ ধুতে ধুতে হাতটা যেন খনিকের জন্য থমকালো... চোখের সামনে ভেসে উঠল গত রাতের শশুরের সাথে তার চোখাচুখির মুহুর্তটা, পরক্ষনেই সে দৃশ্যটা জোর করে মন থেকে ঝেড়ে ফেলে আবার মাছ ধুতে মন দেয় সুমিতা। হাতের কাজ করতে করতেই স্বাভাবিক কন্ঠে উত্তর দেবার চেষ্টা করে, ‘কেন? কি করছিলাম? শুতে যাবার আগে রান্নাঘরে কিছু কাজ ছিল, সেগুলোই সারতে এসেছিলাম।’ বলে ঠিকই, কিন্তু গলার স্বরটা কি একটু শুকনো শোনায় না তার?
‘শুধু কাজ, আর কি করছিলে তোমরা... এখানে?’ চাপা স্বরে সাবধানী প্রশ্ন শশুরের।
বাক্যালাপের মধ্যে দিয়ে ততক্ষনে খানিক ধাতস্থ হয়ে উঠেছে সুমিতা, শশুরের প্রথম প্রশ্নের ধাক্কা সামলে নিয়েছে সে। তাই মনে মনে ভাবল, নাঃ, এই ভাবে তাদের কথোপকথন চলতে দেওয়া যায় না, এটাকে এখানেই শেষ করার দরকার, তাদের সম্পর্কের মধ্যে একটা রেখা টেনে রাখা প্রয়োজন। মাছের টুকরো গুলো একটা পাত্রে রেখে একটু বেশ জোরের সাথেই পাত্রটাকে ঠক করে স্ল্যাবের ঊপর রেখে ঘুরে দাঁড়ায় সে, তারপর শশুরের পাশ কাটিয়ে গিয়ে ফ্রিজ খুলে একটু ঝুঁকে দইয়ের বাটিটা বের করে আবার নিজের জায়গায় ফিরে আসে। খানিকটা দই নিয়ে মাছের উপর ঢালতে ঢালতে উত্তর দেয়, ‘স্বামী স্ত্রী একসাথে থাকলে যা করা উচিত, সেটাই হচ্ছিল, এর থেকে আর বেশি কিছু কি? এটাই তো স্বাভাবিক? নয় কি... বাবা?’
অখিলেশ তার বৌমার থেকে এই ভাবে উত্তর পাবে, সম্ভবত ভাবে নি। চুপ করে খানিক দাঁড়িয়ে থেকে চুপচাপ রান্নাঘর ছেড়ে বেরিয়ে যায় ধীর পদক্ষেপে।
‘আর তাছাড়া...’ বলতে বলতে পেছন ফিরে সুমিতা দেখে শশুরমশাই আর পেছনে দাঁড়িয়ে নেই। দরজার দিকে খানিক তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে, তারপর ফিরে তাক থেকে নুন আর হলুদের কৌটটা পেড়ে নিয়ে মাছের টুকরো গুলো নিয়ে পড়ে সে।
‘বৌদি, স্নানে যাচ্ছি, কালকের বাসি জামাকাপড়গুলো আমি কেচে দেব?’ খানিকপর নিতা এসে ঢোকে কিচেনে।
নিতার গলার স্বরে মুখ তুলে তাকায় সুমিতা। দেখতে বেশ তার এই ননদটি। শরীরে একটা সুখি, সচ্ছল পরিবারের বউএর ছাপ সুস্পষ্ট...। পরণের আগের রাতের পাতলা ম্যাক্সিটার ওপারে থরে থরে সাজানো যৌবন সম্ভারের প্রলোভন... বয়শের তরজাটা ভাবটা পুরো মাত্রায় দেহের সমস্ত আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে। পাকা গমের মত গায়ের রঙ... মাথার চুলগুলো থাক করে কাটা, কাঁধ ছাড়িয়ে পীঠের ওপর কুয়াশার মত জাল বিস্তার করে অনাদরে পড়ে রয়েছে... ডানদিক ঘেঁসে একটা সরু চুলের গোছা লালচে রঙে রাঙানো... বর্তমান আধুনিকতার পরশ। হাত পায়ের নিটোল গড়ন... মেদহীন উদর... সুডৌল উদ্ধত স্তন আর উন্নত সুদৃঢ় বর্তুল নিতম্ব... নবীন সতেজতার পারাকাষ্ঠায় সাজানো নিতার দেহবল্লরী। সমুর মতই তার বোনও যথেষ্ট ফর্সা আর সুন্দরী... বিয়ে হয়ে যাওয়া সত্তেও চলনে বলনে সদ্য পরিপক্যতার সাথে কুমারীসুলভ আচরণের সংমিশ্রণ লক্ষণীয়।
বেশিদিন বিয়ে হয় নি তার এই ননদের। এই তো, বছর তিনেক। যখন বিয়ে করে এসেছিল সুমিতা তখন নিতা স্কুলের মাধ্যমিকের এক সাদামাটা বোকাসোকা ছাত্রী। আর আজ বিয়ে করে রীতি মত বদলে গিয়েছে সব দিক দিয়েই। এখনও বাচ্ছা হয় নি। বলে ওরা নাকি বছর পাঁচেক এঞ্জয় করবে নিজেদের জীবনটাকে, তারপর বাচ্ছা নেবে। ভাবলেও ভালো লাগে। এরা কত ভেবে চিন্তে পরিকল্পনা নিয়ে জীবনটাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। অথচ তার বাবলু এসেছিল বিয়ে ঠিক পরের বছরই। কখন কি ভাবে বাবলুর জন্মের বীজ তার শরীরে ঢুকে গেল সে জানতেই পারল না। অথচ তারও ইচ্ছা ছিল ননদের মত পাঁচ বছর না হলেও অন্তত বছর তিনেক পর কাউকে আনতে। অবস্য তা নিয়ে তার যে কোন আফসোস রয়েছে, তা ঠিক নয়, বরং বাবলুকে পেয়ে সে খুশি। শুধু খুশি নয়, গর্বিতও বটে। মনের মত করে নিজের ছেলেকে মানুষ করেছে সুমিতা। আর কিছুদিন পরই তার ছেলে হয়তো বড় কোন চাকরী করবে।
‘তুই ছেড়ে দে... তোকে আর এই কদিন এসে আর এই সব কাজ করতে হবে না।’ ননদের দিক থেকে মুখ সরিয়ে মনে করে করে কাপ মেপে চাল বের করতে করতে উত্তর দেয় সুমিতা।
‘তা কেন বৌদি, এইটুকু করলে আবার কাজ নাকি? আর আমি তো স্নানে যাচ্ছিই’ উত্তর দেয় নিতা।
‘না রে মনা, তা নয়। শুধু তো এই গুলো তো নয়, আমাকে তোর দাদার জামাকাপরও কাচতে হবে। আর তাছাড়া আমি সবগুলোই ওয়াশিং মেশিনে কাচব, তুই কেন শুধু শুধু হাত লাগাবি। যা তো, তার থেকে তুই বরং স্নান করে নেয় গিয়ে।’ তাড়া লাগায় নিতার বৌদি।
‘আচ্ছা, ঠিক আছে, তুমি বলছ যখন...’ বলে নিতা পা বাড়ায় যাবার জন্য।
‘হ্যা রে, তোর বর কি করছে? ও স্নানে যাবে না?’ প্রশ্ন করে সুমিতা।
‘ওর কথা আর বোলো না, যা গেঁতো তোমার নন্দাই, সেই তখন থেকে কাগজ নিয়ে পড়েছে। কত বলছি যাও, স্নানে যাও, এই যাচ্ছি যাব করেই চলেছ।’ হাসতে হাসতে বলে নিতা।
‘যা, যা, তোরা দুটোতে বরং এক সাথেই চান করে নে গিয়ে।’ হেসে বলে ওঠে সুমিতা।
নিজের বৌদি ওর কাছে খুব সহজ। বিয়ের পর থেকে এসে ওকে নিজের পেটের বোনের মত করে শাসন করেছে, বড় করেছে। ওর যা কিছু আবদার, তা ওর এই বৌদির কাছেই। দুজনের কথা শুনলে মনেই হয় না যে ওরা ননদ বৌদি... মনে হয় ওরা দুই বন্ধু কথা বলছে।
বৌদির কথা শুনে হেসে ফেলে নিতা, ‘তুমি না একটা যা তা। এখন তোমার নন্দাইকে নিয়ে একসাথে চান করতে ঢুকি আর একটা কেলেঙ্কারি বাঁধাই আর কি। বাবা রয়েছে না?’
‘বাবা রয়েছে, না?’ নিজের মনেই স্বগক্তি করে সুমিতা। ততক্ষনে নিতা বেরিয়ে গিয়েছে কিচেন থেকে।
সে ও বেরিয়ে আসতে যায় কিচেন থেকে, কিন্তু তখনই আবার শশুর মশাই এসে ঢোকেন কিচেনে। তাঁকে দেখে সুমিতা দাঁড়িয়ে পড়ে।
‘কিছু বলবেন, বাবা...’, প্রশ্ন করে সুমিতা।
‘হ্যা, বলছিলাম, তোমার কাছে একটু তেল হবে?’... কুন্ঠীত স্বরে প্রশ্ন করে অখিলেশ।
‘তেল?’ অবাক হয় সুমিতা। ‘কেন বাবা? তেল কি হবে?’ জানতে চায় সে।
‘না, মানে, আসলে বয়স হচ্ছে তো, তাই শরীরের নানান জায়গার চামড়া শুকিয়ে উঠেছে, ভাবছি একটু তেল মাখব... একটু তেল দাও তো বৌমা...’ একটু থেমে থেমে উত্তর দেয় অখিলেশ।
‘এই এত গরমে তেল মাখবেন গায়?’ একটু আশ্চর্য হয়েই প্রশ্ন করে সুমিতা। ‘আচ্ছা, একটু দাঁড়ান বাবা, দিচ্ছি...’ বলে ঘুরে একটা ছোট বাটিতে খানিক সর্ষের তেল নিয়ে গ্যাস জ্বেলে সামান্য একটু গরম করে অখিলেশের হাতে দেয়। সুমিতার হাত থেকে বাটিটা নেবার সময় কেন জানি না তার মনে হয় একটু বেশিই সময় নিলেন তার শশুর মশাই। প্রয়োজনের তুলনায় যেন একটু বেশিক্ষনই তার পুত্রবধুর হাতের ওপর তেলের বাটিটা তুলে নিতে সময় লাগল। তারপর ধীর পায়ে বেরিয়ে গেল কিচেন থেকে।
সুমিতা অপলক অখিলেশের চলে যাবার দিকে তাকিয়ে রয়, তারপর ছোট নিঃশ্বাস ফেলে সেও কিচেন থেকে বেরিয়ে গিয়ে অন্য বাথরুমে ঢুকে ওয়াশিং মেশিনের ঢাকাটা খোলে। সাধারণতঃ বাড়ীতে ছাড়া জামাকাপড়গুলো এই ওয়াশিং মেশিনেই রেখে দেওয়া হয়। সময় হলে একসাথে সে কাচা বসিয়ে দেয়। ওয়াসিং মেশিনের ঢাকাটা তুলতেই ভেতরে, অন্যান্য ছেড়ে রাখা কাপড়ের ওপরের দিকেই তার শশুরমশাইয়ের একটা লুঙ্গি চোখে পড়ে সুমিতার। হাত দিয়ে সেটা তুলতেই হাতে একটা কিছু ভিজে ভিজে ঠেকে। ভালো করে সামনে তুলে ধরতেই অভিজ্ঞ চোখে বুঝতে অসুবিধা হয় না ভেজা জায়গাটা কিসের জন্য হয়েছে... এবং সেটা খুব একটা আগের নয়, সেটাও বোঝা যায়। খুব বেশি হলে আজকের ভোরের দিকেরই হবে, কারণ খানিকটা শুকিয়ে এলেও পুরোটা এখনও শোকায় নি। তার চোখে পড়ে নিচের দিকে আরো একটা ছেড়ে রাখা লুঙ্গি। একটু আশ্চর্যই হয় সে। আরো একটা? সেটাকে হাতে তুলে ধরে... দেখে সেটাতেও বীর্যের শুকিয়ে যাবার স্পষ্ট ছাপ। মানে এটা আগের রাতের। একটা রাত আর তারপরই ভোরের মধ্যে দু-দুটো লুঙ্গি? একটু আশ্চর্য হয় সে, ভাবতে থাকে, কই, আগে কখন তো এই জিনিস ঘটে নি। শুধু এবারে নয়, আগেও তো শশুরমশাই তাদের বাড়িতে এসে কতদিন করে থেকে গিয়েছে, এবারেও ওরা এবাড়ীতে আসার পর থেকে প্রায়দিনই তো সে মেশিনে কাচা বসায় টুকটাক সবার জামাকাপড় কাচার জন্য। তারমানে এ সবই কালকের রাতের ঘটনারই পরিণাম। লুঙ্গির ওই খানিকটা শুকিয়ে যাওয়া অংশটার দিকে তাকিয়ে থেকে সে... তারপর হাতের দুটোকে আবার মেশিনের মধ্যে ঢুকিয়ে রেখে বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসে... এখনও রান্না ঘরে অনেক কাজ পড়ে আছে... পরে এসে না হয় কাচাটা চালিয়ে দেব’খন...।
করিডোর দিয়ে কিচেনের দিকে ফিরে যাবার সময় খেয়াল করে শশুরের ঘরের দরজাটা ভেজানো রয়েছে, কিন্তু একেবারে বন্ধ নয়, সামান্য একটু ফাঁক রয়েছে তাতে। সাধারণতঃ কারুর ঘরে আড়ি পাতার মানসিকতা তার কোনদিনও ছিল না, কিন্তু সেই মুহুর্তে কেন জানা নেই, কি একটা অমোঘ আকর্ষণে সে আলতো পায়ে এগিয়ে যায় শশুর মশাইয়ের ঘরের দরজার দিকে, চোখ রাখে সে দরজার ফাঁকে। ভেতরে তার চোখে পড়ে শশুর মশাই বিছানার ওপর বসে আছেন দরজার দিকে পেছন করে। কিন্তু একটা অদ্ভুত ধরনের চাপা অস্পষ্ট শব্দ আর সেই সাথে তাঁর ডান হাতের সঞ্চালনা দেখে সুমিতার অভিজ্ঞ চোখ বুঝতে ভুল করে না এই মুহুর্তে তার শশুর মশাই কি করছেন। দেখে, কিছু বলে না, চুপচাপ সরে আসতে যায়... কিন্তু পরক্ষনেই স্তব্দ হয়ে সেখানেই দাঁড়িয়ে পড়ে সে... কানে আসে অখিলেশের অস্ফুট গলায় উচ্চারিত একটা নাম... ‘ওহহহহহ বৌমা......’।
১লা মে, সকাল ৮:১০
‘একটা দিন যদি একটু যদি সকাল সকাল ওঠে লোকটা... জানে তো বাজার যেতে হবে... আজ আবার টুনির মা কাজ করতে এলো না, ছুতো নাতায় ছুটি করবে...’ তাড়াহুড়ো করে লুচি বেলার জন্য মেখে রাখা ময়দার তাল থেকে লেচি ছিড়তে ছিড়তে গজগজ করতে থাকে সুমিতা। পাশে নিতা লুচি বেলার জন্য বেলন চাকি ঠিক করছে, লেচিগুলো পেলেই বেলতে শুরু করে দেবে সে। আজকের জলখাবারে লুচি আর বেগুনভাজা... সাথে পান্তুয়া।
বড্ড বেলা হয়ে গিয়েছে... কখন সবাইকে জলখাবার দেবে আর কখন রান্না চাপাবে। নিতাটা ধরেছে আজ ছুটি রয়েছে বলে ওকে নিয়ে একটু বেরোবার জন্য... ওরা ঠিক করেছে দুপুরে একটু তাড়াতাড়ি করে খেয়েই বেরিয়ে পড়বে... লেক মার্কেটে যাবে... ফিরে যাবার আগে নিতার কিছু মেয়েলি টুকটাক কেনাকাটা রয়েছে... সেগুলো বৌদিকে সাথে নিয়ে কিনে ফেলতে চায়... আবার কবে কলকাতায় আসা হবে। সুমিতা অবস্য নিতাকে বলেছিল... ‘যা না, সোমেশকে সাথে নিয়ে ঘুরে আয়... ওর ও ভালো লাগবে...’ শুনে নিতা ফোঁস করে উঠেছিল... ‘তোমার নন্দাইয়ের কথা আর বোলো না... ছুটি থাকলেই সারাদিন টিভির মধ্যে ঢুকে বসে থাকবেন বাবু, হয় খেলা না হয় খবর... আর তা ছাড়া এই সব মেয়েলি জিনিস কিনতে ওকে নিয়ে গিয়ে আমি ফাঁসবো নাকি? কিছু বোঝে নাকি ও? ওর চোখে সবকিছুই ভালো... যেটাই দেখাবো... হ্যা গো, এটা ভালো... উত্তর দেবে... হ্যা হ্যা, ভালোই তো... দূর দূর... ওকে নিয়ে গেলে চলবে না... কোন চয়েসই নেই ওর...’ শুনে হেসে ফেলেছিল সুমিতা... ‘ও, আমার নন্দাইয়ের চয়েস নেই? তাহলে কি করে তোকে পছন্দ করল শুনি?’ শুনেই নিতার ফর্সা গাল দুটো লাল হয়ে উঠেছিল... মাথা নিচু করে উত্তর দিয়েছে... ‘জীবনে ওই একবারই ভালো চয়েস করতে পেরেছিল... তারপর থেকে ডাহা ফেল...’ বলেই হো হো করে দুজনেই হাসতে থেকেছে।
সমু কিচেনে ঢুকে স্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলে ওঠে... ‘কি হোলো? এই তো উঠে পড়েছি... বাব্বা, ছুটির দিনেও মহারানী একটু ঘুমাতে দেবে না... অন্যদিন তো ভোর হোতে না হোতেই ঠেলে তুলে দাও... তখন কি আমি ল্যাদ খেয়ে পড়ে থাকি? দেখ নিতা, আমার কি হাল হয় তোর বৌদির হাতে পড়ে...’ তারপর নিজের বোনের দিকে ফিরে বলে, ‘কি রে নিতা, একটু চা খাওয়াবি না?’
সুমিতা জানে সমুর ঘুম থেকে উঠেই চা চাই... না হলে ওকে দিয়ে কোন কাজ করানো যাবে না... তাই ননদের দিকে ফিরে বললো, ‘তুই লুচিটা না বেলে বরং একটু দাদার জন্য চায়ের জল চাপিয়ে দে, আমার এদিকটায় লেচি পাকানো হয়ে গেছে, আমি বরং লুচি গুলো বেলছি... তুই চা করে ভাজতে শুরু করে দিস...’ তারপর স্বামীর দিকে তাকিয়ে বলল, ‘ও, আমার পাল্লায় পড়ে জীবনটা একেবারে নরক হয়ে গেছে, তাই তো? এ কথা তুমি বললে তো? নিতা শাক্ষী রইল কিন্তু!’
তাড়াতারি করে সমু নিজের কথা সামলায়, ‘আরে না, না, সেটা বলছিনা, এই ভাবে সব কথা ধরে নাকি সোনা... তুমি না আমার... বলে সুমিতার ঘনিষ্ট হবার চেষ্টা করে সে। সুমিতা চট করে আটকায় তাকে, ইশারায় নিতাকে দেখায়... সমুও চুপ করে ভালো ছেলের মত মুখ করে দাঁড়িয়ে পড়ে। নিতা দাদাদের প্রেম দেখে মিচকি মিচকি হাসতে থাকে হাতের কাজ করতে করতে।
সুমিতা সমুর উদ্দেশ্যে বলে, ‘এই, আজকে একটু ভালো দেখে পাঁঠার মাংস নিয়ে আসবে তো বাজার থেকে... দুপুরে ভাবছি মাংস আর ভাত করে দেব... বেশি কিছু রাঁধবো না আর... না হলে তাড়াতাড়ি সারতে পারবো না... আমরা আবার একটু বেরুবো।’
শুনে সমু নাকটাকে কুঁচকে বলে, ‘শুধু মাংস আর ভাত? ব্যস? এ বাবা, ছুটির দিনে শুধু দুটো পদ? এ আবার হয় নাকি, একটু মাছ হবে না?’
‘উফফফফ... একটা দিনও বাবুর মাছ ছাড়া চলবে না... মেছো বাঙালী কোথাকার...’ তারপর কি ভেবে সুমিতা বলে, ‘আচ্ছা, তোমাকে ভাবতে হবে না... এই নিতা... চা-টা করে না দেখ তো, ডীপ ফ্রিজে বোধহয় ট্যাংরা মাছ রাখা আছে... ওটাও না হয় একট সর্ষেবাটা দিয়ে নেড়ে দেব, বাবুর ইচ্ছা যখন... ওনার আবার ট্যাংরা মাছ খুব প্রিয়।’
সুমিতার কথা শুনে নিতা পাশ থেকে বলে ওঠে, ‘ওই তোমার দোষ বৌদি... তুমিই দাদাকে আসকারা দিয়ে মাথায় তুলে রেখেছ... যেই দাদা বলল মাছ হবে না? অমনি ওনার মাথায় খেলে গেল কি করে নিজের বরকে মাছ খাওয়াবে... সত্যিই পারোও বটে... আমার বর বললে বলতাম খেতে ইচ্ছা হয়েছে যাও বাইরে থেকে অডার দিয়ে আনাও, আমি রাঁধতে পারবো না...।’
ননদের কথা শুনে ইষৎ হাসে সুমিতা... মনে মনে ভাবে... তোমার বর ব্যাঙ্গালোর শহরে বিদেশী কোম্পনীতে বিশাল চাকরি করে... তোমার ইচ্ছা হলেই যখন তখন বাইরে থেকে অডার দিয়ে খাবার আনিয়ে নাও... কিন্তু আমাদের কত বুঝে চলতে হয় সেটা তো জানো না... আজ তোমরা রয়েছ বলে এত রকমের জলখাবার আর রান্না হচ্ছে... তা না হলে ওই একরকম করেই আমরা চালিয়ে নিই... সমুও যে খুব খারাপ চাকরি করে তা নয়... একটা বেসরকারী অফিসের আধিকারিক পদেই রয়েছে সেও, কিন্তু এই তিন কামরার ফ্ল্যাটের জন্য প্রতিমাসের কিস্তির টাকা আর বাবলুটার কলেজের পড়ার খরচা চালিয়ে কতটুকুই বা হাতে থাকে... এই ভাবেই তো সংসার চালিয়ে নিয়েই চলেছে সে... বাইরের কারুকে বুঝতে দেয় না বলেই না... আজ যে কত দিন পর তোমার দাদা পাঁঠার মাংস আনবে সে সেই জানে... অন্যদিন হলে তো পঞ্চাশ টাকার মুর্গির মাংস ছুটির দিনে বাঁধা... আর প্রতি রবিবার একবার করে সাপ্তাহিক মাছ এনে ডীপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখা... সেটা দিয়েই সারাটা সপ্তাহ কাটিয়ে দেয়া। অবস্য তাতে তার কোন ক্ষোভ নেই... সেও জানে এই ভাবে না চললে বাবলুটা মানুষ হবে না... ছেলেটার জন্যই তো সব... একদিন বাবলু যখন বড় চাকরি করবে, তখন আর তাদের এই ভাবে কষ্ট করতে হবে না...। ভাবতে ভাবতে মুখ তুলে স্বামীর দিকে তাকায়। সমুর বুঝতে বাকি থাকে না স্ত্রীর মনের মধ্যে কি চলছে... স্মিত হেসে মাথা হেলায় সে... যেন চোখের ভাষায় স্ত্রীকে বলে... ভাবছ কেন... ও ঠিক ম্যানেজ হয়ে যাবে... চিন্তা কর না... আমি তো আছি...। সমুর চোখের ভাষায় ভরসা পায় সুমিতা... সেও জানে... সমু যখন আছে, তখন সব ঠিক হয়ে যাবে... সে যে ওর জীবনের সব থেকে বড় ভরসা... ও যে সব ওর কাছে...।
‘তুমিও খাবে তো, বৌদি?’ নিতার প্রশ্নে চটক ভাঙে সুমিতার। স্বামীর থেকে মুখ ফিরিয়ে লুচি বেলায় মন দেয় সে... ‘না রে, আমি আর খাবো না... ওই একবার সকালে হলেই হয়... আমার চায়ের অত নেশা নেই... তুই বরং তোর দাদার সাথে সোমেশ আর বাবাকেও চা দিস... বুঝলি?’
শশুর মশাইয়ের কথা মনে আসতেই তার মনে পড়ে যায় গত দিনের কথাগুলো। গতকাল প্রায় সারাটা দিন সে খেয়াল করেছে শশুর মশাইকে অনেকবার করে বাথরুমে যেতে... আর শুধু যেতে না... বেশ কিছুটা সময় নিয়ে বাথরুমেই ঢুকে থাকছেন...। পরে ওয়াশিং মেশিনে আরো বেশ কয়টা লুঙ্গি খেয়াল করেছে সে... এ কি শুরু করেছেন উনি... এই ভাবে এত হস্তমৈথুন করলে তো শরীর খারাপ হয়ে যাবে... মুখে কিছু বলতেও পারছে না সে... সমুকেও এ কথা বলা যায় না... না যায় নিতাকে কিছু বলা... কি যে একটা ফ্যাসাদে পড়ল সে... তার বুঝতে অসুবিধা হয় না... এ সবই ঘটছে সেদিনের রাতের ঐ ঘটনার পর থেকে... নয় তো বাবাকে এই এত বছরের মধ্যে কখনও এই ভাবে দেখে নি সে... এতটা যৌন ক্ষুদা বাবার? ভাবতে ভাবতে একটু যেন অবাকই লাগে তার... কই, সমু তো তারই ছেলে... তার মধ্যে তো এত যৌনখিদে কখনও দেখে নি সে... একবার ওদের হলে বেশ কিছুদিন আর কিছু হয় না... হ্যা... বিয়ের পর পরই অবস্য রোজই হত, প্রায় দিনে দুই তিন বার করেই হত, কিন্তু এই বয়স এসে সমুর আর সে ইচ্ছাটা যেন অনেকটাই প্রশমিত হয়ে পড়েছে... বরং তারই যেন এখনও ইচ্ছাটা মরে যায় নি... মাঝে মধ্যেই ইচ্ছাটা ভিষন ভাবে চাগাড় দিয়ে ওঠে... সমু সারাদিনের কাজের চাপে ক্লান্ত থাকে বলে আর করা হয়ে ওঠে না... তাই সেও মনের ইচ্ছাটা মনেই চেপে রাখে... মিথুনের কথা মাথায় আসতেই উপলব্ধি করে তলপেটের মধ্যেটা সিরসির করে ওঠে যেন... ওই জায়গাটায় আদ্রতা অনুভূত হয় তার... জোর করে মনটাকে কাজের দিকে ফেরাবার চেষ্টা করে সুমিতা...
সমু চায়ের কাপ হাতে বেরিয়ে যায় কিচেন থেকে... নিতাও ওর বরের আর বাবার জন্য চা দিতে চলে গেছে... সুমিতা বেলা লুচিগুলো ভাজতে মন দেয়...
‘একটু তেল হবে?’ পেছন থেকে শশুর মশাইয়ের গলা ভেসে আসে...
‘এখন?’ ফিরে প্রশ্ন করে সুমিতা।
‘হ্যা... মানে... ওই আর কি... একটু হলে ভালো হতো...’ কুন্ঠিত উত্তর অখিলেশের।
শশুরের হাত থেকে তেলের বাটিটা নিয়ে তাতে তেল ঢেলে আবার ফিরিয়ে দেয় সুমিতা। তারপর ফিরে আবার লুচি ভাজায় মন দেয়। নিচু স্বরে একটু যেন কঠিন ভাবেই প্রশ্ন করে, ‘এতগুলো লুঙ্গি এক দিনে কাচায় পড়ে কি করে বাবা?’
‘একজন বিপত্নিকের আর এর থেকে কি করার আছে বৌমা...’ চাপা স্বরে উত্তর আসে অখিলেশের কাছ থেকে।
শুনে থমকে যায় সুমিতা। তেলের কড়ার দিকে তাকিয়ে চুপ করে ভাবতে থাকে সে... ঠিকই তো... এখানে তো বাবার কোন দোষ সে দেখে না... একজনের বিয়োগে আর একটা মানুষের সব ইচ্ছা অনিচ্ছা কি মরে যায়? আর সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে এই ঘটনার জন্য কিছু অংশে তারাও তো দায়ী... সেদিন যদি তারা আর একটু সংযত হত, তা হলে হয়তো ওদেরকে ওই ভাবে অসতর্ক অবস্থায় মৈথুনরত দেখে এই বয়সে এসে এই রকম কান্ডকারখানা উনি শুরুই করতেন না... আগে তো কখনো শশুরকে এই জিনিস করতে সে দেখে নি... নিজেরই কেমন একটা অপরাধ বোধ হতে লাগে তার... এ ভাবে হয়তো না বললেও পারতো সে...
ঘুরে সে শশুর মশাইকে নিজের সমবেদনা জানাতে যায়... কিন্তু দেখে ততক্ষনে কখন নিরবে অখিলেশ কিচেন ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। কড়াই থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখে সম্বিত পায় সুমিতা, তাড়াতাড়ি কড়াই থেকে পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া লুচিটাকে খুন্তি দিয়ে তুলে বাস্কেটে ফেলে দেয়। একটা চাপা দীর্ঘনিঃশ্বাস বেরিয়ে আসে তার বুকের থেকে।
৩০শে এপ্রিল, বেলা ১১:২০
‘একটা কথা বলতেই হবে, ছেলে আমার খুব ভাগ্যবান...’ কথাটা ছুড়ে দেয় অখিলেশ, সমুর বাবা, তার বৌমার দিকে।
পরদিন অনেক সকালে উঠতে হয়েছে সুমিতাকে। সমুকে দিয়ে বাজার করিয়ে নিয়েছে। কারণ ও অফিস বেরিয়ে যাবার পরই রান্না চাপাবে ঠিক করেছে। সমু সাধারণতঃ ভাত খেয়েই অফিস যায়। তাই সকাল সকাল উঠেই তাড়াহুড়ো করে ভাত, একটা তরকারি আর মাছের একটা পদ সুমিতা রান্না করে দেয় সমুকে, পরে সে দুপুরের দিকে সংসারের সব কাজ সেরে স্নান সেরে পুজো করে খেতে বসে। এটাই হয়ে থাকে নিত্যদিন প্রায়... ছুটির দিনগুলো বাদে বা যদি কচিৎকখনও তাদের অন্যকোথাও নিমত্রণ না থাকে। কিন্তু এখন যে হেতু বাড়ীতে অতিথিরা রয়েছে তাই সমুই নিজের থেকে বলেছে যে অত তাড়াতাড়ি রান্না করার দরকার নেই, সে না হয় যা হোক কিছু লাঞ্চ এ বাইরে খেয়ে নেবে, কারণ এত সকাল সকাল ভাত বসালে যখন বাকিরা খাবে তখন ঠান্ডা হয়ে যাবে সে ভাত। তার থেকে সুমিতা বরং ধীরে সুস্থে পরে রান্না বসালেই চলবে। একবার সুমিতা বলেছিল যে সে না হয় সমুর জন্য এই ক’টা দিন না হয় ও সকালে একবার ভাত করে দেবে, তারপর বেলার দিকে আর একবার ভাত বসিয়ে দেবে। কিন্তু সমু আপত্তি করেছিল, বারবার করে সুমিতা ভাত বসাবে, সেটা হয়তো চায়নি তার স্বামী, সুমিতাও আর দ্বিমত করে নি। সত্যি তো, ও না হয় পরে যখন খায় তখন যা হোক করে মাইক্রওভেনে ভাতটা গরম করে নিয়ে খেতে বসে, কিন্তু সেটা তো আর সমুর বাবা বা বাড়ীর জামাইকে দেওয়া যায় না, আর বার বার করে ভাত বসালেও গ্যাস পুড়বে অনেক, তাই সমুকে সকাল বেলা একটু জলখাবার করেই খেতে দিয়েছে সে, তাই খেয়ে সমু অফিস চলে গিয়েছে। টুকটাক বাকি কাজ সেরে সে রান্না সারতে কিচেনে ঢুকেছে। খেয়াল করেনি কখন তার শশুর এসে দাঁড়িয়েছে পাশে... শশুরের গলার স্বরে ঘুরে মুখ তুলে তাকায় সুমিতা।
‘হটাৎ? এই কথা?’ প্রশ্ন করে সুমিতা।
আজও সে কাল রাতের মতই একটা পাতলা সুতির শাড়ী পরে তার আঁচলটাকে পেঁচিয়ে কোমরের মধ্যে গুঁজে দিয়েছে। পাতলা শাড়ীটাকে এইভাবে টান করে পরার ফলে তার শরীরের সমস্ত চড়াই উৎরাই প্রকট হয়ে রয়েছে যথারীতি। আজকাল সে আর শশুরের সামনে ঘোমটা টানে না। সে দিন অনেক আগেই চলে গিয়েছে... শাশুড়ি মায়ের মারা যাবার পরই। কিচেনের জানলা দিয়ে আসা দিনের আলোয় সুমিতার ইষৎ স্ফিত মসৃণ পেটটা চোখের সম্মুখে দৃষ্যমান। নিজেও সেটা তার সহজাত অনুভুতিতে বুঝতে পারে সুমিতা। তাই শশুর এসে দাঁড়িয়েছে দেখে একবার হাত বাড়িয়ে নিজের আঁচলটা কোমর থেকে খুলে পেট ঢেকে দেবে বলে টানতে গিয়েও কি মনে করে আর হাত বাড়ায় না সেই দিকে। আর তাছাড়া তার হাতে তখন সমুর বাজার থেকে এনে দেওয়া কাতলা মাছের পেটি ধরা, তাই মাছের সোগ্রী হাতে আর ইচ্ছা করে না নিজের পোষাকে হাত দিতে। এমন কিছু নিশ্চয় দেখা যাচ্ছে না, আর দেখা গেলে যাবে’খন... ভেবে আবার ফিরে দাঁড়িয়ে মাছের টুকরোগুলো বেসিনের কলের নিচে ধুতে থাকে সে।
মাছ ধুতে ধুতে ফিরিয়ে প্রশ্ন করে, ‘কই, বললেন না তো, হটাৎ কেন এতদিন পর এই কথা বললেন?’
‘কাল কি করছিলে..., এখানে... রাতে?’ সুমিতার প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে একটা লম্বা শ্বাস টেনে, থেমে থেমে আবার প্রশ্ন করে অখিলেশ। আজ এত বছর পর সত্যিই যেন সে তার বৌমার দিকে ভালো করে তাকাল। বৌমাকে চোখের সামনে দেখতে দেখতে কেমন যেন একটা মাদকতা উপলব্ধি করতে লাগল সে। আগে কখনও ভেবে দেখনি তার পুত্রবধু এতটা যৌনমদির। কখনও দেখেনি তার ছেলের বউএর শরীরটাতে এত আকর্ষণীয় চড়াই উৎরাই রয়েছে। চোখে পড়েনি কখনও সুমিতার বুকের এই ভরাট সম্পদের উপস্থিতি বা নিতম্বের এই উত্তলতা আর তার সাথে সেটার এই ব্যাপ্তি, কিম্বা ইশৎ মেদের পরতে ঢাকা সামান্য স্ফিত মসৃন পেটের মাঝে নাভীর গভীরতা। এত বছর অখিলেশ যে চোখ নিয়ে এই সামনে গৃহকর্মরত নারীর সৌন্দর্য অবলোকন করেছে, আজ হটাৎ করে তার সেই সমস্ত ধ্যান ধারণা কেমন উলটে পালটে যাচ্ছে বলে মনে হয়। এই মুহুর্তে নিজের পুত্রবধুর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে তার মনে হচ্ছে এতদিন ধরে সে যা ভেবেছিল, ভুল, সব ভুল। নারীর সৌন্দর্য শুধু তার রূপে বা গুণে নয়, নারীর সৌন্দর্য নারীর নারীত্বে... তার শরীরের কোমলতায়... তার শরীরের প্রতিটি চড়াই উৎরাইতে... একটি নারীর প্রতিটা রোমকূপ সে সৌন্দর্য মাদকতা ছড়িয়ে রয়েছে... তার চলনে, বলনে, নড়ায়, চড়ায়, বস্ ওঠায়, এমনকি এক লহমার চোখের চাহনিতে ... সে সৌন্দর্য কখনও সূর্যের মত তীব্র, চন্দ্রীমার মত স্নীগ্ধ আবার কখনও সাধারণ দর্শনে স্বাভাবিক মনে হলেও, সেখানে এক অসম্ভব চৌম্বকিয় আকর্ষণ বিদ্যমান। যা তাকে এই মুহুর্তে এক টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। যেন তার সমস্ত জ্ঞান... বুদ্ধি... বিবেচনা... শিক্ষা... দিক্ষা... মা... মর্যাদা... ঠিক... বেঠিক... ন্যায়... অন্যায়..., সব, সব কিছু মিলে মিশে একাকার করে দিচ্ছে।
প্রশ্নটা শুনে মাছ ধুতে ধুতে হাতটা যেন খনিকের জন্য থমকালো... চোখের সামনে ভেসে উঠল গত রাতের শশুরের সাথে তার চোখাচুখির মুহুর্তটা, পরক্ষনেই সে দৃশ্যটা জোর করে মন থেকে ঝেড়ে ফেলে আবার মাছ ধুতে মন দেয় সুমিতা। হাতের কাজ করতে করতেই স্বাভাবিক কন্ঠে উত্তর দেবার চেষ্টা করে, ‘কেন? কি করছিলাম? শুতে যাবার আগে রান্নাঘরে কিছু কাজ ছিল, সেগুলোই সারতে এসেছিলাম।’ বলে ঠিকই, কিন্তু গলার স্বরটা কি একটু শুকনো শোনায় না তার?
‘শুধু কাজ, আর কি করছিলে তোমরা... এখানে?’ চাপা স্বরে সাবধানী প্রশ্ন শশুরের।
বাক্যালাপের মধ্যে দিয়ে ততক্ষনে খানিক ধাতস্থ হয়ে উঠেছে সুমিতা, শশুরের প্রথম প্রশ্নের ধাক্কা সামলে নিয়েছে সে। তাই মনে মনে ভাবল, নাঃ, এই ভাবে তাদের কথোপকথন চলতে দেওয়া যায় না, এটাকে এখানেই শেষ করার দরকার, তাদের সম্পর্কের মধ্যে একটা রেখা টেনে রাখা প্রয়োজন। মাছের টুকরো গুলো একটা পাত্রে রেখে একটু বেশ জোরের সাথেই পাত্রটাকে ঠক করে স্ল্যাবের ঊপর রেখে ঘুরে দাঁড়ায় সে, তারপর শশুরের পাশ কাটিয়ে গিয়ে ফ্রিজ খুলে একটু ঝুঁকে দইয়ের বাটিটা বের করে আবার নিজের জায়গায় ফিরে আসে। খানিকটা দই নিয়ে মাছের উপর ঢালতে ঢালতে উত্তর দেয়, ‘স্বামী স্ত্রী একসাথে থাকলে যা করা উচিত, সেটাই হচ্ছিল, এর থেকে আর বেশি কিছু কি? এটাই তো স্বাভাবিক? নয় কি... বাবা?’
অখিলেশ তার বৌমার থেকে এই ভাবে উত্তর পাবে, সম্ভবত ভাবে নি। চুপ করে খানিক দাঁড়িয়ে থেকে চুপচাপ রান্নাঘর ছেড়ে বেরিয়ে যায় ধীর পদক্ষেপে।
‘আর তাছাড়া...’ বলতে বলতে পেছন ফিরে সুমিতা দেখে শশুরমশাই আর পেছনে দাঁড়িয়ে নেই। দরজার দিকে খানিক তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে, তারপর ফিরে তাক থেকে নুন আর হলুদের কৌটটা পেড়ে নিয়ে মাছের টুকরো গুলো নিয়ে পড়ে সে।
‘বৌদি, স্নানে যাচ্ছি, কালকের বাসি জামাকাপড়গুলো আমি কেচে দেব?’ খানিকপর নিতা এসে ঢোকে কিচেনে।
নিতার গলার স্বরে মুখ তুলে তাকায় সুমিতা। দেখতে বেশ তার এই ননদটি। শরীরে একটা সুখি, সচ্ছল পরিবারের বউএর ছাপ সুস্পষ্ট...। পরণের আগের রাতের পাতলা ম্যাক্সিটার ওপারে থরে থরে সাজানো যৌবন সম্ভারের প্রলোভন... বয়শের তরজাটা ভাবটা পুরো মাত্রায় দেহের সমস্ত আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে। পাকা গমের মত গায়ের রঙ... মাথার চুলগুলো থাক করে কাটা, কাঁধ ছাড়িয়ে পীঠের ওপর কুয়াশার মত জাল বিস্তার করে অনাদরে পড়ে রয়েছে... ডানদিক ঘেঁসে একটা সরু চুলের গোছা লালচে রঙে রাঙানো... বর্তমান আধুনিকতার পরশ। হাত পায়ের নিটোল গড়ন... মেদহীন উদর... সুডৌল উদ্ধত স্তন আর উন্নত সুদৃঢ় বর্তুল নিতম্ব... নবীন সতেজতার পারাকাষ্ঠায় সাজানো নিতার দেহবল্লরী। সমুর মতই তার বোনও যথেষ্ট ফর্সা আর সুন্দরী... বিয়ে হয়ে যাওয়া সত্তেও চলনে বলনে সদ্য পরিপক্যতার সাথে কুমারীসুলভ আচরণের সংমিশ্রণ লক্ষণীয়।
বেশিদিন বিয়ে হয় নি তার এই ননদের। এই তো, বছর তিনেক। যখন বিয়ে করে এসেছিল সুমিতা তখন নিতা স্কুলের মাধ্যমিকের এক সাদামাটা বোকাসোকা ছাত্রী। আর আজ বিয়ে করে রীতি মত বদলে গিয়েছে সব দিক দিয়েই। এখনও বাচ্ছা হয় নি। বলে ওরা নাকি বছর পাঁচেক এঞ্জয় করবে নিজেদের জীবনটাকে, তারপর বাচ্ছা নেবে। ভাবলেও ভালো লাগে। এরা কত ভেবে চিন্তে পরিকল্পনা নিয়ে জীবনটাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। অথচ তার বাবলু এসেছিল বিয়ে ঠিক পরের বছরই। কখন কি ভাবে বাবলুর জন্মের বীজ তার শরীরে ঢুকে গেল সে জানতেই পারল না। অথচ তারও ইচ্ছা ছিল ননদের মত পাঁচ বছর না হলেও অন্তত বছর তিনেক পর কাউকে আনতে। অবস্য তা নিয়ে তার যে কোন আফসোস রয়েছে, তা ঠিক নয়, বরং বাবলুকে পেয়ে সে খুশি। শুধু খুশি নয়, গর্বিতও বটে। মনের মত করে নিজের ছেলেকে মানুষ করেছে সুমিতা। আর কিছুদিন পরই তার ছেলে হয়তো বড় কোন চাকরী করবে।
‘তুই ছেড়ে দে... তোকে আর এই কদিন এসে আর এই সব কাজ করতে হবে না।’ ননদের দিক থেকে মুখ সরিয়ে মনে করে করে কাপ মেপে চাল বের করতে করতে উত্তর দেয় সুমিতা।
‘তা কেন বৌদি, এইটুকু করলে আবার কাজ নাকি? আর আমি তো স্নানে যাচ্ছিই’ উত্তর দেয় নিতা।
‘না রে মনা, তা নয়। শুধু তো এই গুলো তো নয়, আমাকে তোর দাদার জামাকাপরও কাচতে হবে। আর তাছাড়া আমি সবগুলোই ওয়াশিং মেশিনে কাচব, তুই কেন শুধু শুধু হাত লাগাবি। যা তো, তার থেকে তুই বরং স্নান করে নেয় গিয়ে।’ তাড়া লাগায় নিতার বৌদি।
‘আচ্ছা, ঠিক আছে, তুমি বলছ যখন...’ বলে নিতা পা বাড়ায় যাবার জন্য।
‘হ্যা রে, তোর বর কি করছে? ও স্নানে যাবে না?’ প্রশ্ন করে সুমিতা।
‘ওর কথা আর বোলো না, যা গেঁতো তোমার নন্দাই, সেই তখন থেকে কাগজ নিয়ে পড়েছে। কত বলছি যাও, স্নানে যাও, এই যাচ্ছি যাব করেই চলেছ।’ হাসতে হাসতে বলে নিতা।
‘যা, যা, তোরা দুটোতে বরং এক সাথেই চান করে নে গিয়ে।’ হেসে বলে ওঠে সুমিতা।
নিজের বৌদি ওর কাছে খুব সহজ। বিয়ের পর থেকে এসে ওকে নিজের পেটের বোনের মত করে শাসন করেছে, বড় করেছে। ওর যা কিছু আবদার, তা ওর এই বৌদির কাছেই। দুজনের কথা শুনলে মনেই হয় না যে ওরা ননদ বৌদি... মনে হয় ওরা দুই বন্ধু কথা বলছে।
বৌদির কথা শুনে হেসে ফেলে নিতা, ‘তুমি না একটা যা তা। এখন তোমার নন্দাইকে নিয়ে একসাথে চান করতে ঢুকি আর একটা কেলেঙ্কারি বাঁধাই আর কি। বাবা রয়েছে না?’
‘বাবা রয়েছে, না?’ নিজের মনেই স্বগক্তি করে সুমিতা। ততক্ষনে নিতা বেরিয়ে গিয়েছে কিচেন থেকে।
সে ও বেরিয়ে আসতে যায় কিচেন থেকে, কিন্তু তখনই আবার শশুর মশাই এসে ঢোকেন কিচেনে। তাঁকে দেখে সুমিতা দাঁড়িয়ে পড়ে।
‘কিছু বলবেন, বাবা...’, প্রশ্ন করে সুমিতা।
‘হ্যা, বলছিলাম, তোমার কাছে একটু তেল হবে?’... কুন্ঠীত স্বরে প্রশ্ন করে অখিলেশ।
‘তেল?’ অবাক হয় সুমিতা। ‘কেন বাবা? তেল কি হবে?’ জানতে চায় সে।
‘না, মানে, আসলে বয়স হচ্ছে তো, তাই শরীরের নানান জায়গার চামড়া শুকিয়ে উঠেছে, ভাবছি একটু তেল মাখব... একটু তেল দাও তো বৌমা...’ একটু থেমে থেমে উত্তর দেয় অখিলেশ।
‘এই এত গরমে তেল মাখবেন গায়?’ একটু আশ্চর্য হয়েই প্রশ্ন করে সুমিতা। ‘আচ্ছা, একটু দাঁড়ান বাবা, দিচ্ছি...’ বলে ঘুরে একটা ছোট বাটিতে খানিক সর্ষের তেল নিয়ে গ্যাস জ্বেলে সামান্য একটু গরম করে অখিলেশের হাতে দেয়। সুমিতার হাত থেকে বাটিটা নেবার সময় কেন জানি না তার মনে হয় একটু বেশিই সময় নিলেন তার শশুর মশাই। প্রয়োজনের তুলনায় যেন একটু বেশিক্ষনই তার পুত্রবধুর হাতের ওপর তেলের বাটিটা তুলে নিতে সময় লাগল। তারপর ধীর পায়ে বেরিয়ে গেল কিচেন থেকে।
সুমিতা অপলক অখিলেশের চলে যাবার দিকে তাকিয়ে রয়, তারপর ছোট নিঃশ্বাস ফেলে সেও কিচেন থেকে বেরিয়ে গিয়ে অন্য বাথরুমে ঢুকে ওয়াশিং মেশিনের ঢাকাটা খোলে। সাধারণতঃ বাড়ীতে ছাড়া জামাকাপড়গুলো এই ওয়াশিং মেশিনেই রেখে দেওয়া হয়। সময় হলে একসাথে সে কাচা বসিয়ে দেয়। ওয়াসিং মেশিনের ঢাকাটা তুলতেই ভেতরে, অন্যান্য ছেড়ে রাখা কাপড়ের ওপরের দিকেই তার শশুরমশাইয়ের একটা লুঙ্গি চোখে পড়ে সুমিতার। হাত দিয়ে সেটা তুলতেই হাতে একটা কিছু ভিজে ভিজে ঠেকে। ভালো করে সামনে তুলে ধরতেই অভিজ্ঞ চোখে বুঝতে অসুবিধা হয় না ভেজা জায়গাটা কিসের জন্য হয়েছে... এবং সেটা খুব একটা আগের নয়, সেটাও বোঝা যায়। খুব বেশি হলে আজকের ভোরের দিকেরই হবে, কারণ খানিকটা শুকিয়ে এলেও পুরোটা এখনও শোকায় নি। তার চোখে পড়ে নিচের দিকে আরো একটা ছেড়ে রাখা লুঙ্গি। একটু আশ্চর্যই হয় সে। আরো একটা? সেটাকে হাতে তুলে ধরে... দেখে সেটাতেও বীর্যের শুকিয়ে যাবার স্পষ্ট ছাপ। মানে এটা আগের রাতের। একটা রাত আর তারপরই ভোরের মধ্যে দু-দুটো লুঙ্গি? একটু আশ্চর্য হয় সে, ভাবতে থাকে, কই, আগে কখন তো এই জিনিস ঘটে নি। শুধু এবারে নয়, আগেও তো শশুরমশাই তাদের বাড়িতে এসে কতদিন করে থেকে গিয়েছে, এবারেও ওরা এবাড়ীতে আসার পর থেকে প্রায়দিনই তো সে মেশিনে কাচা বসায় টুকটাক সবার জামাকাপড় কাচার জন্য। তারমানে এ সবই কালকের রাতের ঘটনারই পরিণাম। লুঙ্গির ওই খানিকটা শুকিয়ে যাওয়া অংশটার দিকে তাকিয়ে থেকে সে... তারপর হাতের দুটোকে আবার মেশিনের মধ্যে ঢুকিয়ে রেখে বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসে... এখনও রান্না ঘরে অনেক কাজ পড়ে আছে... পরে এসে না হয় কাচাটা চালিয়ে দেব’খন...।
করিডোর দিয়ে কিচেনের দিকে ফিরে যাবার সময় খেয়াল করে শশুরের ঘরের দরজাটা ভেজানো রয়েছে, কিন্তু একেবারে বন্ধ নয়, সামান্য একটু ফাঁক রয়েছে তাতে। সাধারণতঃ কারুর ঘরে আড়ি পাতার মানসিকতা তার কোনদিনও ছিল না, কিন্তু সেই মুহুর্তে কেন জানা নেই, কি একটা অমোঘ আকর্ষণে সে আলতো পায়ে এগিয়ে যায় শশুর মশাইয়ের ঘরের দরজার দিকে, চোখ রাখে সে দরজার ফাঁকে। ভেতরে তার চোখে পড়ে শশুর মশাই বিছানার ওপর বসে আছেন দরজার দিকে পেছন করে। কিন্তু একটা অদ্ভুত ধরনের চাপা অস্পষ্ট শব্দ আর সেই সাথে তাঁর ডান হাতের সঞ্চালনা দেখে সুমিতার অভিজ্ঞ চোখ বুঝতে ভুল করে না এই মুহুর্তে তার শশুর মশাই কি করছেন। দেখে, কিছু বলে না, চুপচাপ সরে আসতে যায়... কিন্তু পরক্ষনেই স্তব্দ হয়ে সেখানেই দাঁড়িয়ে পড়ে সে... কানে আসে অখিলেশের অস্ফুট গলায় উচ্চারিত একটা নাম... ‘ওহহহহহ বৌমা......’।
১লা মে, সকাল ৮:১০
‘একটা দিন যদি একটু যদি সকাল সকাল ওঠে লোকটা... জানে তো বাজার যেতে হবে... আজ আবার টুনির মা কাজ করতে এলো না, ছুতো নাতায় ছুটি করবে...’ তাড়াহুড়ো করে লুচি বেলার জন্য মেখে রাখা ময়দার তাল থেকে লেচি ছিড়তে ছিড়তে গজগজ করতে থাকে সুমিতা। পাশে নিতা লুচি বেলার জন্য বেলন চাকি ঠিক করছে, লেচিগুলো পেলেই বেলতে শুরু করে দেবে সে। আজকের জলখাবারে লুচি আর বেগুনভাজা... সাথে পান্তুয়া।
বড্ড বেলা হয়ে গিয়েছে... কখন সবাইকে জলখাবার দেবে আর কখন রান্না চাপাবে। নিতাটা ধরেছে আজ ছুটি রয়েছে বলে ওকে নিয়ে একটু বেরোবার জন্য... ওরা ঠিক করেছে দুপুরে একটু তাড়াতাড়ি করে খেয়েই বেরিয়ে পড়বে... লেক মার্কেটে যাবে... ফিরে যাবার আগে নিতার কিছু মেয়েলি টুকটাক কেনাকাটা রয়েছে... সেগুলো বৌদিকে সাথে নিয়ে কিনে ফেলতে চায়... আবার কবে কলকাতায় আসা হবে। সুমিতা অবস্য নিতাকে বলেছিল... ‘যা না, সোমেশকে সাথে নিয়ে ঘুরে আয়... ওর ও ভালো লাগবে...’ শুনে নিতা ফোঁস করে উঠেছিল... ‘তোমার নন্দাইয়ের কথা আর বোলো না... ছুটি থাকলেই সারাদিন টিভির মধ্যে ঢুকে বসে থাকবেন বাবু, হয় খেলা না হয় খবর... আর তা ছাড়া এই সব মেয়েলি জিনিস কিনতে ওকে নিয়ে গিয়ে আমি ফাঁসবো নাকি? কিছু বোঝে নাকি ও? ওর চোখে সবকিছুই ভালো... যেটাই দেখাবো... হ্যা গো, এটা ভালো... উত্তর দেবে... হ্যা হ্যা, ভালোই তো... দূর দূর... ওকে নিয়ে গেলে চলবে না... কোন চয়েসই নেই ওর...’ শুনে হেসে ফেলেছিল সুমিতা... ‘ও, আমার নন্দাইয়ের চয়েস নেই? তাহলে কি করে তোকে পছন্দ করল শুনি?’ শুনেই নিতার ফর্সা গাল দুটো লাল হয়ে উঠেছিল... মাথা নিচু করে উত্তর দিয়েছে... ‘জীবনে ওই একবারই ভালো চয়েস করতে পেরেছিল... তারপর থেকে ডাহা ফেল...’ বলেই হো হো করে দুজনেই হাসতে থেকেছে।
সমু কিচেনে ঢুকে স্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলে ওঠে... ‘কি হোলো? এই তো উঠে পড়েছি... বাব্বা, ছুটির দিনেও মহারানী একটু ঘুমাতে দেবে না... অন্যদিন তো ভোর হোতে না হোতেই ঠেলে তুলে দাও... তখন কি আমি ল্যাদ খেয়ে পড়ে থাকি? দেখ নিতা, আমার কি হাল হয় তোর বৌদির হাতে পড়ে...’ তারপর নিজের বোনের দিকে ফিরে বলে, ‘কি রে নিতা, একটু চা খাওয়াবি না?’
সুমিতা জানে সমুর ঘুম থেকে উঠেই চা চাই... না হলে ওকে দিয়ে কোন কাজ করানো যাবে না... তাই ননদের দিকে ফিরে বললো, ‘তুই লুচিটা না বেলে বরং একটু দাদার জন্য চায়ের জল চাপিয়ে দে, আমার এদিকটায় লেচি পাকানো হয়ে গেছে, আমি বরং লুচি গুলো বেলছি... তুই চা করে ভাজতে শুরু করে দিস...’ তারপর স্বামীর দিকে তাকিয়ে বলল, ‘ও, আমার পাল্লায় পড়ে জীবনটা একেবারে নরক হয়ে গেছে, তাই তো? এ কথা তুমি বললে তো? নিতা শাক্ষী রইল কিন্তু!’
তাড়াতারি করে সমু নিজের কথা সামলায়, ‘আরে না, না, সেটা বলছিনা, এই ভাবে সব কথা ধরে নাকি সোনা... তুমি না আমার... বলে সুমিতার ঘনিষ্ট হবার চেষ্টা করে সে। সুমিতা চট করে আটকায় তাকে, ইশারায় নিতাকে দেখায়... সমুও চুপ করে ভালো ছেলের মত মুখ করে দাঁড়িয়ে পড়ে। নিতা দাদাদের প্রেম দেখে মিচকি মিচকি হাসতে থাকে হাতের কাজ করতে করতে।
সুমিতা সমুর উদ্দেশ্যে বলে, ‘এই, আজকে একটু ভালো দেখে পাঁঠার মাংস নিয়ে আসবে তো বাজার থেকে... দুপুরে ভাবছি মাংস আর ভাত করে দেব... বেশি কিছু রাঁধবো না আর... না হলে তাড়াতাড়ি সারতে পারবো না... আমরা আবার একটু বেরুবো।’
শুনে সমু নাকটাকে কুঁচকে বলে, ‘শুধু মাংস আর ভাত? ব্যস? এ বাবা, ছুটির দিনে শুধু দুটো পদ? এ আবার হয় নাকি, একটু মাছ হবে না?’
‘উফফফফ... একটা দিনও বাবুর মাছ ছাড়া চলবে না... মেছো বাঙালী কোথাকার...’ তারপর কি ভেবে সুমিতা বলে, ‘আচ্ছা, তোমাকে ভাবতে হবে না... এই নিতা... চা-টা করে না দেখ তো, ডীপ ফ্রিজে বোধহয় ট্যাংরা মাছ রাখা আছে... ওটাও না হয় একট সর্ষেবাটা দিয়ে নেড়ে দেব, বাবুর ইচ্ছা যখন... ওনার আবার ট্যাংরা মাছ খুব প্রিয়।’
সুমিতার কথা শুনে নিতা পাশ থেকে বলে ওঠে, ‘ওই তোমার দোষ বৌদি... তুমিই দাদাকে আসকারা দিয়ে মাথায় তুলে রেখেছ... যেই দাদা বলল মাছ হবে না? অমনি ওনার মাথায় খেলে গেল কি করে নিজের বরকে মাছ খাওয়াবে... সত্যিই পারোও বটে... আমার বর বললে বলতাম খেতে ইচ্ছা হয়েছে যাও বাইরে থেকে অডার দিয়ে আনাও, আমি রাঁধতে পারবো না...।’
ননদের কথা শুনে ইষৎ হাসে সুমিতা... মনে মনে ভাবে... তোমার বর ব্যাঙ্গালোর শহরে বিদেশী কোম্পনীতে বিশাল চাকরি করে... তোমার ইচ্ছা হলেই যখন তখন বাইরে থেকে অডার দিয়ে খাবার আনিয়ে নাও... কিন্তু আমাদের কত বুঝে চলতে হয় সেটা তো জানো না... আজ তোমরা রয়েছ বলে এত রকমের জলখাবার আর রান্না হচ্ছে... তা না হলে ওই একরকম করেই আমরা চালিয়ে নিই... সমুও যে খুব খারাপ চাকরি করে তা নয়... একটা বেসরকারী অফিসের আধিকারিক পদেই রয়েছে সেও, কিন্তু এই তিন কামরার ফ্ল্যাটের জন্য প্রতিমাসের কিস্তির টাকা আর বাবলুটার কলেজের পড়ার খরচা চালিয়ে কতটুকুই বা হাতে থাকে... এই ভাবেই তো সংসার চালিয়ে নিয়েই চলেছে সে... বাইরের কারুকে বুঝতে দেয় না বলেই না... আজ যে কত দিন পর তোমার দাদা পাঁঠার মাংস আনবে সে সেই জানে... অন্যদিন হলে তো পঞ্চাশ টাকার মুর্গির মাংস ছুটির দিনে বাঁধা... আর প্রতি রবিবার একবার করে সাপ্তাহিক মাছ এনে ডীপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখা... সেটা দিয়েই সারাটা সপ্তাহ কাটিয়ে দেয়া। অবস্য তাতে তার কোন ক্ষোভ নেই... সেও জানে এই ভাবে না চললে বাবলুটা মানুষ হবে না... ছেলেটার জন্যই তো সব... একদিন বাবলু যখন বড় চাকরি করবে, তখন আর তাদের এই ভাবে কষ্ট করতে হবে না...। ভাবতে ভাবতে মুখ তুলে স্বামীর দিকে তাকায়। সমুর বুঝতে বাকি থাকে না স্ত্রীর মনের মধ্যে কি চলছে... স্মিত হেসে মাথা হেলায় সে... যেন চোখের ভাষায় স্ত্রীকে বলে... ভাবছ কেন... ও ঠিক ম্যানেজ হয়ে যাবে... চিন্তা কর না... আমি তো আছি...। সমুর চোখের ভাষায় ভরসা পায় সুমিতা... সেও জানে... সমু যখন আছে, তখন সব ঠিক হয়ে যাবে... সে যে ওর জীবনের সব থেকে বড় ভরসা... ও যে সব ওর কাছে...।
‘তুমিও খাবে তো, বৌদি?’ নিতার প্রশ্নে চটক ভাঙে সুমিতার। স্বামীর থেকে মুখ ফিরিয়ে লুচি বেলায় মন দেয় সে... ‘না রে, আমি আর খাবো না... ওই একবার সকালে হলেই হয়... আমার চায়ের অত নেশা নেই... তুই বরং তোর দাদার সাথে সোমেশ আর বাবাকেও চা দিস... বুঝলি?’
শশুর মশাইয়ের কথা মনে আসতেই তার মনে পড়ে যায় গত দিনের কথাগুলো। গতকাল প্রায় সারাটা দিন সে খেয়াল করেছে শশুর মশাইকে অনেকবার করে বাথরুমে যেতে... আর শুধু যেতে না... বেশ কিছুটা সময় নিয়ে বাথরুমেই ঢুকে থাকছেন...। পরে ওয়াশিং মেশিনে আরো বেশ কয়টা লুঙ্গি খেয়াল করেছে সে... এ কি শুরু করেছেন উনি... এই ভাবে এত হস্তমৈথুন করলে তো শরীর খারাপ হয়ে যাবে... মুখে কিছু বলতেও পারছে না সে... সমুকেও এ কথা বলা যায় না... না যায় নিতাকে কিছু বলা... কি যে একটা ফ্যাসাদে পড়ল সে... তার বুঝতে অসুবিধা হয় না... এ সবই ঘটছে সেদিনের রাতের ঐ ঘটনার পর থেকে... নয় তো বাবাকে এই এত বছরের মধ্যে কখনও এই ভাবে দেখে নি সে... এতটা যৌন ক্ষুদা বাবার? ভাবতে ভাবতে একটু যেন অবাকই লাগে তার... কই, সমু তো তারই ছেলে... তার মধ্যে তো এত যৌনখিদে কখনও দেখে নি সে... একবার ওদের হলে বেশ কিছুদিন আর কিছু হয় না... হ্যা... বিয়ের পর পরই অবস্য রোজই হত, প্রায় দিনে দুই তিন বার করেই হত, কিন্তু এই বয়স এসে সমুর আর সে ইচ্ছাটা যেন অনেকটাই প্রশমিত হয়ে পড়েছে... বরং তারই যেন এখনও ইচ্ছাটা মরে যায় নি... মাঝে মধ্যেই ইচ্ছাটা ভিষন ভাবে চাগাড় দিয়ে ওঠে... সমু সারাদিনের কাজের চাপে ক্লান্ত থাকে বলে আর করা হয়ে ওঠে না... তাই সেও মনের ইচ্ছাটা মনেই চেপে রাখে... মিথুনের কথা মাথায় আসতেই উপলব্ধি করে তলপেটের মধ্যেটা সিরসির করে ওঠে যেন... ওই জায়গাটায় আদ্রতা অনুভূত হয় তার... জোর করে মনটাকে কাজের দিকে ফেরাবার চেষ্টা করে সুমিতা...
সমু চায়ের কাপ হাতে বেরিয়ে যায় কিচেন থেকে... নিতাও ওর বরের আর বাবার জন্য চা দিতে চলে গেছে... সুমিতা বেলা লুচিগুলো ভাজতে মন দেয়...
‘একটু তেল হবে?’ পেছন থেকে শশুর মশাইয়ের গলা ভেসে আসে...
‘এখন?’ ফিরে প্রশ্ন করে সুমিতা।
‘হ্যা... মানে... ওই আর কি... একটু হলে ভালো হতো...’ কুন্ঠিত উত্তর অখিলেশের।
শশুরের হাত থেকে তেলের বাটিটা নিয়ে তাতে তেল ঢেলে আবার ফিরিয়ে দেয় সুমিতা। তারপর ফিরে আবার লুচি ভাজায় মন দেয়। নিচু স্বরে একটু যেন কঠিন ভাবেই প্রশ্ন করে, ‘এতগুলো লুঙ্গি এক দিনে কাচায় পড়ে কি করে বাবা?’
‘একজন বিপত্নিকের আর এর থেকে কি করার আছে বৌমা...’ চাপা স্বরে উত্তর আসে অখিলেশের কাছ থেকে।
শুনে থমকে যায় সুমিতা। তেলের কড়ার দিকে তাকিয়ে চুপ করে ভাবতে থাকে সে... ঠিকই তো... এখানে তো বাবার কোন দোষ সে দেখে না... একজনের বিয়োগে আর একটা মানুষের সব ইচ্ছা অনিচ্ছা কি মরে যায়? আর সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে এই ঘটনার জন্য কিছু অংশে তারাও তো দায়ী... সেদিন যদি তারা আর একটু সংযত হত, তা হলে হয়তো ওদেরকে ওই ভাবে অসতর্ক অবস্থায় মৈথুনরত দেখে এই বয়সে এসে এই রকম কান্ডকারখানা উনি শুরুই করতেন না... আগে তো কখনো শশুরকে এই জিনিস করতে সে দেখে নি... নিজেরই কেমন একটা অপরাধ বোধ হতে লাগে তার... এ ভাবে হয়তো না বললেও পারতো সে...
ঘুরে সে শশুর মশাইকে নিজের সমবেদনা জানাতে যায়... কিন্তু দেখে ততক্ষনে কখন নিরবে অখিলেশ কিচেন ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। কড়াই থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখে সম্বিত পায় সুমিতা, তাড়াতাড়ি কড়াই থেকে পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া লুচিটাকে খুন্তি দিয়ে তুলে বাস্কেটে ফেলে দেয়। একটা চাপা দীর্ঘনিঃশ্বাস বেরিয়ে আসে তার বুকের থেকে।